করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সাত দিনের স্ট্রিক্ট ভিউ বা কঠোর বিধিনিষেধের সময় একজন মানুষও ঘরের বাইরে বের হতে পারবেন না।
যদি কেউ এই নির্দেশনা অমান্য করে বাইরে আসেন, তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে সরকার।
কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে মাঠে থাকবে বিজিবি, সেনাবাহিনী ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। এমনকি এবার থাকছে না মুভমেন্ট পাসও।
সাম্প্রতিক লকডাউনে মানুষের চলাচল সীমিত করা হলে পুলিশের পক্ষ থেকে মুভমেন্ট পাস দেয়া হয়। অনলাইনে নিবন্ধন করে একজন নাগরিক মুভমেন্ট পাসটি সংগ্রহ করতেন। সেটি দায়িত্বরত পুলিশকে দেখিয়ে বাসার বাইরে যাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু সরকার এবার আরও কঠোর।
সচিবালয়ে সোমবার দুপুরে মন্ত্রিসভা বৈঠকের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘স্ট্রিক্ট ভিউতে যাচ্ছি আমরা। এতটুকুই শুধু বলে দিলাম। ১ তারিখ ভোর ৬টা থেকে ৭ তারিখ রাত ১২টা পর্যন্ত স্ট্রিক্ট ভিউতে যাচ্ছি আমরা। ইউ গেট মাই পয়েন্ট? খুবই স্ট্রিক্ট ভিউতে…’
এ সময় চারটি বিভাগের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সচিব বলেন, ‘দেশের একটা মেজর পোরশন অরেঞ্জ, রেড বা ব্রাউন হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং এখন আমাদের বিধিনিষেধ আরোপ করা ছাড়া উপায় নেই।’
কঠোর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিজিবি, সেনাবাহিনী এবং আর্মড ব্যাটালিয়ন পুলিশ থাকবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
তিনি বলেন, ‘আর্মি, বিজিবি, ব্যাটালিয়ন পুলিশ তারা সবাই মাঠে থাকবে। যতটুকু সম্ভব যা দরকার সব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তাদের অথরিটি দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, যাতে মানুষ ম্যাসিভভাবে ঘরের বাইরে বের হতে না পারে।’
অথরিটি বলতে কী বোঝানো হয়েছে, জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘ফোর্স করতে হলে, কাউকে ধরতে হলে, টহল দেবে। কেউ কথা না শুনলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া, এসব।’
এর আগে লকডাউনে জনগণের চলাফেরায় পুলিশের পক্ষ থেকে যে ‘মুভমেন্ট পাস’ চালু করা হয়েছিল, সেটি এবার থাকবে না বলে জানিয়ে দেন খন্দকার আনোয়ারুল।
তিনি বলেন, ‘এবার মুভমেন্ট পাস থাকবে না। কেউ বের হতে পারবে না, পরিষ্কার কথা। যারা জরুরি কাজের সঙ্গে জড়িত তারা চলাচল করবে। দাফন-কাফনের কাজ করা যাবে। কোনো রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাবেন, সেটা যেতে পারবেন।’
জনগণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে লকডাউন বা শাটডাউন কোনোটার প্রয়োজন হতো না বলে মন্তব্য করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
এদিন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, ‘যেহেতু জনগণ যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানা প্রয়োজন ছিল সেভাবে মানছে না, বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীর মধ্যে আগে যে ভীতিটি ছিল, করোনা নিয়ে ভীতিটা এখন আর নেই, সে কারণে করোনা দ্রুত ছড়াচ্ছে।’
এবার তাই সরকার কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যেহেতু জনগণ সেটি ঠিকমতো অনুসরণ করেনি, তাই সে জন্য আমাদের কঠোর লকডাউনে যেতে হচ্ছে। এবার যদি এটির কেউ ব্যত্যয় ঘটায়, তাহলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
কঠোর বিধিনিষেধের বিষয়ে মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
এ সময়ে রিকশা কিংবা শিল্পকারখানা খোলা থাকবে কি না, জানতে চাইলে সচিব বলেন, ‘কালকে আমরা বিস্তারিত অর্ডার করে দেব। আরেকটু আলোচনা করে নিই।’